মা দের হাতে এক জোড়া সিটিগোল্ডের চুড়ি থাকে সবসময়। বছরের পর বছর তারা সেই চুড়ি পরে থাকে হাতে। সবচেয়ে বিশ্বস্ত দোকান থেকে তারা রঙ না উঠার গ্যারান্টি নিয়ে সেই চুড়ি কিনে আনে।
একসময় ঢাকা সহ সারাদেশে আড়াইশো টাকা দামে ইন্ডিয়ান সূতি শাড়ি বাড়ি বাড়ি এনে বিক্রি করতো ফেরিওয়ালারা। মায়েরা, মায়ের বয়সী সবাই সেখানে ভীড় করে শাড়ি কিনতো। দামী কোন কাপড়ের দিকে তারা ফিরেও তাকাতো না। ইভেন এখনো, জোর করে কিনে না দিলে কোনো মা ই কখনো দামী কিচ্ছু কেনে না।
মা দের কখনো কোন পছন্দের খাবার খেতে ইচ্ছা করে না। মা দের কখনো কোন প্রিয় রঙ থাকে না। মা দের কোন শখ থাকে না । এই পৃথিবীতে তারা যেন শুধুই দিতে এসেছে।
মা কে কখনো যদি জিজ্ঞাসা করি,মা তোমার কি খেতে ভাল্লাগে সবথেকে?
মা হাসে! শুধুই হাসে! কোন স্পেসিফিক খাবারের নাম বলে না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মা কাজ করছে, বাইরে থেকে যখনি বাসায় আসি দেখি মা কাজ করছে।
দুপুরে কোনোদিন ঘুমালেও ঘুম থেকে উঠে দেখি মা কাজ করছে। রাতের ঘুমানোর সময়টা বাদ দিয়ে মায়েরা ননস্টপ মেশিনের মত কাজ করতে পারে।
একটানা ফ্যামলির কাজ করার যে শক্তিটা মায়ের হাতে আছে সেটা এই পৃথিবীতে আর কারও নেই। এত বড় ছেলে হয়েও একটা জিন্স প্যান্ট ধুতে আমাদের প্রচুর কষ্ট হয়। আর সারামাসের জমানো চার পাঁচটা জিন্স প্যান্ট সব মায়েরা হাসতে হাসতে যেন ধুয়ে ফেলে।
ছোটবেলায় ছোট করে চুল কাটতে বললে, বিকেলে খেলতে না গিয়ে পড়তে বসতে বললে, অতিরিক্ত শাসন করলে মায়ের উপর খুব রাগ হত। আর এখন, মায়ের একটা শাসন করা কথা, একটা ঝাড়ি শোনার জন্য ওয়েট করে থাকি। মা বকা দিলেও মনের মধ্যে কেমন একটা শান্তি শান্তি ভাব হয়।
পেঁয়াজ কাটতে গেলে তাদেরও চোখ ভেজে, কিছু একটা ভাজতে গেলে তেল ছিটে। মাছ কাটতে গেলে মা দেরও আঙুল কাটে। তবে তাদের এই গল্পগুলো আমাদের অজানা থাকে সবসময়। হয়ত তারাই জানতে দেন না।
মায়েদের সবথেকে কষ্টের মাস হল রোজার মাস। আমাদের স্কুল-কলেজ-অফিসের টাইম কমানো হয় রোজার মাসে। কিন্তু মায়েদের রুটিন আরও টাফ হয়। আজানের বিশ মিনিট আগে উঠে ভাত খেতেই আমাদের খুব কষ্ট হয়ে যায় অথচ মায়েরা দুই ঘন্টা আগে উঠে রান্না শুরু করে। রোজা রেখেও সারাদিন একটার পর একটা কাজ লেগেই থাকে তাদের।
এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা, সবচেয়ে বেশি মায়া। উইথআউট এনি বেনিফিটে সব কাজ করার মানুষটা হল একমাত্র মা।
সকল মা দের প্রতি রইলো ভালোবাসা❤️