বিবাহিত মেয়েটি ট্রেনে উঠতে না উঠতেই আমার অনতিদূরে বসে থাকা অন্য একটি মেয়ে বিবাহিত মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে উচ্চ স্বরে ডাক দিল


 বিবাহিত মেয়েটি ট্রেনে উঠতে না উঠতেই আমার অনতিদূরে বসে থাকা অন্য একটি মেয়ে বিবাহিত মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে উচ্চ স্বরে ডাক দিল,


এই কাবেরী এই কাবেরী....


কাবেরী শুনতে পেয়েই এই মেয়েটির সামনে এসে দাঁড়াতেই মেয়েটি জিজ্ঞেস করল,


-কি রে কবে হলো? চুপি চুপি সেরে নিলি বল..


কাবেরী হেসে বলল,


-আর বলিস না। হঠাৎ করেই হয়ে গেল...


আরে বস বস, কি সুন্দর লাগছে তোকে, যাই বলিস কাবেরী বিয়ে করে  লুকটাই পাল্টে গেছে তোর। তা তুই একা, সৌরভদা কোথায়?


সৌরভের নাম শুনে নাক সিটকে কাবেরী বলে উঠল,


-মাথা খারাপ! তুই কি ভাবলি  ওকে আমি ওকে বিয়ে করব?


-ওমা সেকি! আমি তো ভাবলাম সৌরভদার সাথেই তোর...


-ছাড়তো ওর কথা! আমার সাথে রিলেশনে থেকেও অন্য মেয়ের সাথে রিলেশন রেখেছিল।


কাবেরীর কথা শুনে বান্ধবী বলে উঠল,


-কি বলিস, দেখে তো মনে হতো না সৌরভদা এমন ক্যারেক্টার বলে। মানুষ পারে কি করে এগুলো করতে?


-আরে  দেখে  কাউকে বোঝা যায় না। চার বছর ধরে রিলেশনে ছিলাম, অথচ আমি ছাড়াও আরো একজন ছিল ওর জীবনে।


-বেশ করেছিস বিয়ে করিস নি। এমন মানুষের সাথে থাকা যায়? মানুষ একজনের সাথেই  লয়াল থাকতে পারে না কেন কে  জানে?


সত্যিই তো, মানুষ কেন যে এসব করে? কথাটা শুনে আমার নিজেরও খারাপ লাগছিল। সৌরভ কাজটা মোটেই ঠিক করেনি। এমন ছেলেকে বিয়ে না করে কাবেরী ঠিকই করেছে। এদিকে কিছুক্ষণ চুপ থেকে কাবেরী বলল, 


-ওসব  চরিত্রের দোষ বুঝলি তো।


-যাক ওসব নিয়ে আর ভাবিস না। তোকে যে ঠকিয়েছে, তাকেও একদিন জ্বলতে হবে। দেখবি ভগবান ঠিক ওকে জ্বলাবেই।


কাবেরী হেসে বলল,


-বুঝলি নেহা, ভগবান ওকে জ্বলাবেন কিনা জানি না, তবে আমি নিজেই সে ব্যবস্থা  করে দিয়েছি, আমাকে দেখবে আর হিংসেয় জ্বলবে।


এমন কথা শুনে নেহা  অবাক ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করল,


-তুই? তুই আবার কি করলি!


-তুই কি ভাবলি আমি বোকা আছি? সৌরভের পাশের  বাড়ির ছেলেকেই তো আমি বিয়ে করেছি। এমনিতেই ওদের সাথে শত্রুতা। ওর শত্রুকে আমি বিয়ে করেছি, ভাবতে পারছিস!


কাবেরীর মুখ থেকে এমন কথা শুনে নেহা জিজ্ঞেস করে, পাশের বাড়ি মানে? দেখে শুনেই বিয়ে তো?


-আরে ধুরর! বিশালকে চিনিস তো? সৌরভের থেকে ঢের গুণ অবস্থা ভালো। নিজের গাড়ি আছে। কি আছে সৌরভের!

সৌরভের সাথে  প্রেম করেছি ঠিকই, তবে ব্যাকাপ হিসেবে বিশাল আর সুমিত তো ছিলই। যাকে তাকে তো আর বিয়ে করলে হয় না তাই না?


কাবেরীর কথা শুনে নেহা যেন এবারে মিইয়ে গেল। এরপর নেহার উত্তরটা কি আসে সেটা শুনব বলে কান খাড়া করলাম। দেখলাম, নেহা কোনো উত্ত‍র করল না। কথা ঘুরিয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে গেল। কিছুক্ষণ আগেই এই নেহাই লয়াল থাকার প্রসঙ্গ তুলেছিল। অথচ কাবেরী সৌরভের সাথে প্রেম চলাকালীন ব্যাকাপ হিসেবে একজনকে নয়, দুজনকে রেখেছিল। এই  সত্যিটা জেনেও নেহা কিন্তু আর  মুখ খুলল না। কিন্তু  কেন? আমি তখন ভাবছি, চরিত্রের দোষটা আসলে কার ছিল? 


(সত্য ঘটনা)


কলমে; সরজিৎ ঘোষ

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم