আমার সামনেই হাতের মোবাইল টা আছার মারলো আমার স্ত্রী নিশি।

 আমার সামনেই হাতের মোবাইল টা আছার মারলো আমার স্ত্রী নিশি।


মেঝেতে পরার সাথে সাথে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো টুকরো হয়ে গেলো নিশিকে সদ্য কিনে দেওয়া মোবাইলটা।

মোবাইলটা ভেঙ্গে ফেলে হনহন করে ব্যালকনির দিকে চলে গেলো নিশি।।

আর আমি বোকার মতো চেয়ে আর ওর দিকে।

মোবাইল আছার দেওয়ার কারন......?

কারণ হলো আমি ওর মোবাইল হাতে নিয়েছি কেন...?

আমি এবং নিশি বিয়ে করেছি ৩ বছর।

আমাদের বিয়েটা প্রেম করেও নয় আবার ভালবেসেও নয়।

আগে থেকে দুজন দুজনকে পছন্দ কটতাম। মানে আমি নিশির ছোট ভাই মুহিবকে পড়াইতাম। সেই থেকেই আমাদের পরিচয়।

সেটা ওর পরিবার জানার পর আর না করে নি। কেননা যখন ওর বাবা মা আমাদের পছন্দ করার বিষয়টা জানতে পারে। 

তখন আমি ভাল একটা জব করতাম।

তখন.....?

হুমমম আমি এখন বেকার। আমার বস হঠাৎ করে বাংলাদেশ থেকে সব কিছু গুটিয়ে নিয়ে uk চলে গেলে বেকার হয়ে পড়ি আমি।

uk এর মতো দেশে ভালো পার্টনার শিপে ব্যাবসা করতে পারলে,,

কে চায় এদেশে থাকতে বলুন।

যখন আমি চাকরি করতাম তখন নিশি অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী ছিলো।

এখন নিশি চাকরি আমি বেকার।

ঠিক ধরেছেন.....

নিশি অনার্স কমপ্লিট করে ওর এক বন্ধুর মাধ্যমে একটা জব পায়।

আর বলতে গেলে সেদিন থেকেই এসব শুরু আমার জীবনে।

কি হয়েছে এখানে.....? (আমার মা)

কিছু না। (এতোক্ষনে সব ক্লিন করে নিয়েছি)

কিছু একটা ভাঙ্গার শব্দ পেলাম।

কই না তো

!

নিশি কই

....?

ব্যালকনিতে

ও বলেই 

চলে গেলো আমার মা।

মা চলে যাওয়ার পর আমি নিশির দিকে ব্যালকনিতে গেলাম।

নিশির কাধে হাত দিয়ে বললাম

মোবাইলটা ভাঙ্গার কি দরকার ছিলো......?

নিশি চুপ

আমিও কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বললাম,,,,

অফিসে যাবে না.....?

এখন বিরক্ত করো নাতো.....

শক্ত গলায় বললো নিশি

আমিও আর কথা না বাড়িয়ে রুমে চলে আসলাম।

কিছুক্ষণ পর নাস্তা নিয়ে আসলো আমার মা।

টেবিলে রেখে তারপর চলে গেলো।

আমরা একটা ভাড়া বাড়িতে থাকি।

আমাদের বিয়ের সময় মুলত মা আসে গ্রাম থেকে।

তারপর নিশি আর মাকে যেতে দেয় নি।

ওর নাকি একা থাকতে ভালো লাগতো না তাই।

আমি যখন চাকরি করতাম তখন বাসায় একটা কাজের মেয়ে ছিলো।

তখন মা কোন কাজ করতো না।

আমার চাকরি চলে যাওয়ার পর

মেয়টাকে বেশি দিন রাখতে পারি নি।

চলে যেতে হয় ওকে।

তারপর থেকে মা ই সব করে।

নিশিকে ডেকে নিয়ে নাস্তা সেটে বসে নাস্তা সেরে নিলাম যে যার মতো।

তারপর নিশি অফিস চলে গেলো।

আমিও রেডি হয়ে বেড়িয়ে পরলাম ইন্টারভিউ দিতে।

হুমমমম,,,,

আজ আমার একটা কম্পানিতে ইন্টারভিউ আছে।

সেটা কখন হবে, কোথায় হবে সেটা ওদের পেজ থেকে জানার জন্যই নিশির মোবাইলটা হাতে নিয়েছিলাম।

আমার মোবাইলে ডাটা ছিলো না তাই।

রাস্তা দিয়ে হাটছি আর হাতে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছি।

প্রচন্ড রোদ,,,

তবে রোদে হাটার অভ্যাস আমার আছে।

জীবনে কম কষ্ট করিনি।

হাটতে হাটতে গন্তব্যে পৌছে গেলাম।

ওয়েটং রুমে বসে আছি,,,

কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আমার ডাক পরলো।

ইন্টারভিউ দিলাম।

তবে চাকরিটা হবে বলে মনে হয় না।

নাহ ইন্টারভিউ খারাপ হয় নি।

চাকরিটা হবে না কারণ আমার যে মামা খালু নেই।

সুপারিশ ছাড়া এখন চাকরি সোনার হরিণের চেয়েও দামি।

আবারো হেটে হেটে বাসায় ফিরছি।

হঠাৎ সকালের কথাটা মনে পড়ে গেলো।

মানে নিশির মোবাইল ভাঙ্গার কথা।

তাই রাস্তার ধারে একটা মোবাইল মার্কেটে ঢুকলাম। নিশির জন্য একটা মোবাইল দেখার জন্য।

হয়তো এটা ভাবছেন,, যে রিক্সা ভাড়া না দিয়ে যে হেটে ইন্টারভিউ দিতে যায়। সে কিনবে মোবাইল...?

আসলে টাকা আমার কাছে কিছু টাকা আছে। বাকিটা না হয় কারো কাছে ধার নেব।

কেননা মোবাইলটা তো আমার জন্যই ভেঙ্গেছে।

দুই একটা দোকান ঘুরে মার্কেটের কোনায় একটা বড় দোকান দেখে সেদিকে হাটতে শুরু করলাম।

হঠাৎ কেউ আমাকে পেছন থেকে ধাকা দিয়ে এগিয়ে গেলো।

ধাকাটা সামাল দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি একটা কাপেল।

হাত ধরে হাটছে।

ছেলেটাকে চিনি না,,,

কিন্তু মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছে।

তাই একটু দ্রুত হাটাতে শুরু করলাম।

কিন্ত ওদের নাগাল পেলাম না।

খটকা লাগলো মনে। মেয়েটা নিশি নয় তো.....?

কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে মোবাইল না নিয়েই বেড়িয়ে পরলাম মার্কেট থেকে।


হতাশ হয়ে বাসায় ফিরলাম।

রুমে এসে খাটের উপর শুয়ে মাথায় হাত দিয়ে আছি।

এমন সময় কারো হাতের স্পশ অবুভব করলাম।

চোখ খুলে দেখি মা।

কিরে চাকরিটা হয় নি....?

""""মা"" অদ্ভুদ এক প্রানি। সন্তানের মুখ দেখে তার ভিরতের সব কিছু বুঝতে পারে।

মায়েদের একটা আলাদা ক্ষমতা আছে।

যা অন্য কারোর নেই।

তাইতো আমাদের প্রিয় ধর্ম ইসলাম ধর্মে বলেছে সন্তানদের বেহেস্ত মায়ের পায়ের নিচে।

আমি বললাম,,,, নাহ হয় নি

খুব ক্লান্ত লাগছে.....?

হুমমম।

দাড়া,,,, আমি পানি নিয়ে আসতেছি।

বলেই চলে গেলো মা।

বিকেলে বসে বসে চাকরির পেপার দেখছি।

এমন সময় নিশি রুমে প্রবেশ করলো।

হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে।

দেখে বুঝতে পারলাম নতুন মোবাইল কিনেছে।

মনে মনে ভাবতে লাগলাম,,

তাহলে কি মার্কেটে দেখা সেই মেয়েটা নিশি....?

চলবে........


গল্প: ছেরা পাতা

আদিল খান

পর্ব:০১


নতুন পাঠ'কেরা পর'বর্তী পর্ব'গুলা মিস না করতে চাইলে সা'থেই থাকুন ❤️

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم