আমি কিছুটা আবাক হয়ে শাশুড়ী মাকে বললাম ঃ- মা আমি কি করেছি? আমি তো আব্বুর বাড়ি থেকে ফিরলাম

 সাতদিন বাপের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে শশুরবাড়ি ঢুকতেই শাশুড়ী আমার পায়ের সামনে কাঁচের গ্লাস

 ছু/ড়ে দিয়ে বললেন আর এক পা ও এইবাড়িতে রাখবে না। তোমার মতো চরি/ত্র/হী/ন মেয়েকে আমি কখনোই নিজের ছেলের বউ করে রাখবো না। 


আমি কিছুটা আবাক হয়ে শাশুড়ী মাকে বললাম ঃ-  মা আমি কি করেছি?  আমি তো আব্বুর বাড়ি থেকে ফিরলাম


। 


পাশ থেকে আমার শাশুড়ীর বোন বললো  ঃ- যেন ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে পারে না। 


আমার শাশুড়ী রাগের সুরে বললো ঃ- আজ আমার বোন আর আমার বোনের মেয়ে মিলি তোমাকে একটা ছেলের সাথে ফুর্তি করতে দেখে এসেছে। কি নির্লজ্জ মেয়ে তুমি? স্বামী থাকতেও তুমি অন্য ছেলের সাথে ঘুরে বেড়াও!


আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই মিলি বলে উঠলো ঃ- আন্টি তুমি ভাইয়া কল দেও। এমন মেয়ের কোনো যোগ্যতা নেই ভাইয়ার বউ হওয়ার। 


আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে শাশুড়ী মা তার ছেলেকে কল দিয়ে বললো যে তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়। স/র্ব/না/শ হয়ে গেছে। 


আমি চুপচাপ চোখের পানি ফেলছি৷ কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না।  আর আমার কথা শোনার সময় ওদের নেই।  তারা আমার চরিত্রের সমালোচনা নিয়েই ব্যস্ত এখন। প্রায় তিরিশ মিনিট পর চমার স্বামী বাড়ি আসতে তারা সবাই হাত পা লাগিয়ে আমার স্বামীর কানে তুললো। 


আমি স্বামী আমার কাছে কিছু জিজ্ঞেস না করে আমার গালে একটা চড় মে/রে আমাকে বললো ঃ- আমি তোকে ভালো মেয়ে মনে করছিলাম৷ কিন্তু তোর তো চরিত্রই ঠিক নেই।


আমার শাশুড়ীর বোন বলে উঠলো ঃ- আমার প্রায় বিশ মিনিটের মত দাঁড়িয়ে ওর কার্যকলাপ দেখছিলাম। ছেলেটার সাথে দাঁড়িয়ে ও ফুচকা খাচ্ছিলো।  একসাথে রিকশায় উঠে গেলো।


পাশ থেকে মিলি বলে উঠলো ঃ- শুধু কি তাই! ছেলেটা ওকে হাত ধরে রিকশায় উঠিয়েছিলো আর ওকে একটা ফুলও কিনে এনে দিলো দোখলাম।


শাশুড়ী মা আমার হাতের দিকে তাকিয়ে বললো ঃ- দেখ বাবা এখনো ওর হাতে ফুল। 


আমি নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সত্যিই আমার হাতে একটা গোলাপ ফুল।  আমি আমার স্বামী কিছু বলতে যাওয়ার আগে তিনি আমার গালে আরো কয়েকটা চড় দিয়ে বললেন ঃ- তোকে আমি আজই তা/লা/ক দিবো।  তোর মতো মেয়ের সাথে আর না। 


আমি মোবাইলটা বের করে আমার খালা শাশুড়ীকে ছবি বের করে দেখিয়ে বললাম ঃ- দেখেন তো এই সেই ছেলেটা কিনা? 


খালা শাশুড়ী কিছু বলার আগেই মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে বললো ঃ-  হ্যা এইসেই ছেলে। দেখেছো কত গায়েগায়ে ছবি তুলেছে।


আমি মিলির হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে খালা শাশুড়ীকে দেখিয়ে বললাম ঃ- দেখেন তো এই সেই ছেলে কিনা?  খালা শাশুড়ী আমার শাশুড়ীকে বললো হ্যা হ্যা ওই সেই ছেলে। 


আমি হাসি মুখে মোবাইলটা আমার স্বামীকে দেখিয়ে বললাম ঃ- আপনি কি এই ছেলেটাকে চেনেন? 


আমার স্বামী তখন মুখটা নিচু করে রইলো কিছুই বললো না। আমি শাশুড়ীকে ছবিটি দেখিয়ে বললাম যে দেখন তো মা আপনি ওকে চেনেন নাকি? 


শাশুড়ীকে চুপ থাকতে দেখে তার বোন বলে উঠলো ঃ-  কি হলো তোদের কে এই ছেলেটা? 


শাশুড়ী মা বললো ঃ- ওই ছেলেটা ওর ভাই। তোরা বিয়ের দিন ওদের বাড়িতে যেতে পারিসনি আর ওর ভাইও আমাদের বাড়ি আসতে পারেনি তাই ওোরা ওকে চিনিস না। 


শাশুড়ীর কথা শুনে দু'জনেই মুখ কালো হতে গেছে। 


আমি সকলের দিকে তাকিয়ে বললাম ঃ- কারো সাথে কাউকে দেখলেই আপনার তাদের প্রেমিক প্রেমিকা মনে করেন কেন? তাদের কি অন্য সম্পর্ক থাকতে পারে না? আমার গোলাপ ফুল খুব পছন্দ তাই আমার ভাইকে আমাকে গোলাপ কিনে দেয় দেখা হলেই। আপনারা কেন মনে করেন যে প্রেমিক প্রেমিকারাই একে অপরকে ফুল দিতে পারে? বা ফুল দিতে হলে তাদের স্বামী স্ত্রী হতে হয়? ফুল ভালোবাসার মানুষদের দেওয়া হয়।  তাই ভাই বোনকে ফুল কিনে দিতে পারবে না এমন কোথায় লেখা আছে?


শাশুড়ীকে বললাম ঃ- মা আপনি না বলতেন আপনার ভাই আপনাকে রোজ কলেজে এগিয়ে দিতো।  আপনাদের মত অনেকেই আপনাকে আর আপনার ভাইকে প্রেমিক প্রেমিকা মনে করতো। 


মিলির দিকে তাকিয়ে বললাম ঃ- তুমি যখন কলেজে যাও তোমার আশেপাশে কি কোনো ছেলে দাঁড়িয়ে ফুচকা খায় না? সবাই কি তোমার প্রেমিক হয়? কাগজে কলমে শিক্ষিত হলেই কি মানুষ হওয়া যায়? নিজের মন মানসিকতা পরিবর্তন করতে শেখো। কাজে লাগবে। না জেনে কাউকে নিয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়।


সব শেষে আমার স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললাম ঃ- তুমি আমাকে কি তা/লা/ক দিবে?  তোমার মতো লোকের সাথে আমি আর সংসার করবো না। যে অন্যের কথা শুনে স্ত্রীকে কি জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে না করে তার গায়ে হাত তোলে, তাকে তা/লা/ক দেওয়ার কথা বলে তার সাথে আর যা হোক সংসার করা যায় না। 


সেই মুহুর্তে ওদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম আর ভাবতে লাগলাম মানুষ এতো নিচু মনের হয় কি করে!



إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم