বাবা মা মানবে না বলে যে ছেলের সাথে ব্রেকাপ করেছিলো আজ সে ছেলের অফিসেই চাকরির জন্য দাঁড়িয়ে আছে আফ্রা! অফিসে ইন্টারভিউ এর জন্য বসে আছে চুপ করে! আজ এতো বছর পর সে আবার তার মুখোমুখি হবে!কি উত্তর দেবে সে? বেকার বলে ছেলেটাকে ছেড়ে এসেছিলো! কিন্তু আজ? ভাবতে ভাবতেই সে যেন হারিয়ে যায়।
হঠাৎ তার সামনে কেউ এসে দাঁড়ায়
-- জ্বি আপনি কার কাছে ইন্টারভিউ এর জন্য এসেছেন?(একটা মেয়ে)
-- জ্বি কাব্য....
-- ওহ! একটু সাবধানে! উনি অনেক রাগী!
বলেই মেয়েটা চলে যায়! আফ্রার এই কথা টা আজব লাগলো! তার মানে কি? কাব্য তো রাগী না! ও তো সব সময় হাসিখুশি থাকতো! হঠাৎ তার মনে হলো আশেপাশে একদম নিস্তব্ধ হয়ে গেছে!এটা কেমন অনুভূতি! এক মিনিট, এটা অনুভুতি না! আফ্রা মাথা তুলে দেখে অফিসের সবাই চুপ হয়ে গেছে।
আফ্রা কিছু বুঝলো না!
-- কাজ না পারলে অফিসে আসার দরকার নেই!(???)
দূরে একটা কেবিন থেকে পরিচিত সেই কন্ঠ টা শুনে আফ্রার বুক কেপে উঠে।
তখনই অফিসের সেই মেয়েটা আবার আসে।
-- জ্বি আপনি এবার ইন্টারভিউ এর জন্য যেতে পারেন!(মেয়েটা)
আফ্রা মাথা নেড়ে কেবিনের দিকে যায়। তার বুক ভয়ে কাপছে। দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে যেতেই দেখে সামনে চেয়ারে কেউ বসে আছে আর তার মুখ ফাইল দিয়ে ঢাকা।
-- আসুন!(???)
আফ্রা ধীরে ধীরে এসে চেয়ারে বসে
-- আপনাকে তো বসতে বলিনি!
-- সরি স্যার!
এবার কাব্য মুখের সামনে থেকে ফাইল সরায়!
-- ইন্টারভিউ তেই অবাধ্য!
-- না না কাব্য...
-- স্যার...
-- সরি স্যার
-- নাম কি?
-- আফ্রা
-- বিবাহিত?
--- না বিয়ে ঠিক
-- চাকরি করার কারন?
-- আসলে কিছু প্রয়োজন তাই
-- চাকরি না করলে ও চলবে?
-- না স্যার এই চাকরি টা খুব প্রয়োজন!
-- হুম বিয়ে কবে!
-- স্যার এসব কেন!
-- জানতে চেয়েছি!
-- ৩মাস পর
-- আপনি কি পদে এপ্লাই করেছেন জানেন তো?
-- জ্বি স্যার! পি এ
-- হুম!
-- জ্বি
-- কাল থেকে জয়েন করবেন
-- স্যার সত্যি!
-- হুম
আফ্রা বেশ খুশি হয়ে যায়! কিন্তু কাব্য একটা চুপচাপ নিজের কাজে মন দেয়
আফ্রা চাকরি পেয়ে খুশি হয়ে বাসায় ফিরে আসে।
মা রান্নাঘরে ছিলো! আফ্রা এসেই মাকে জড়িয়ে ধরে!
-- মা মা মা( মাকে জড়িয়ে ধরে আফ্রা)
-- আরে আরে কি হয়েছে!
-- চাকরি পেয়ে গেছি!!!
-- সত্যি!
মা একটু আবেগী হয়ে যায়। আফ্রা শক্ত করে মাকে জড়িয়ে ধরে
-- মা এবার সব ঠিক হয়ে যাবে!(আফ্রা)
-- তাই যেন হয়! দোয়া করি!
-- হুম মা আবার কিছু খেতে দাও!
-- তুই ফ্রেশ হয়ে আয়!
-- আচ্ছা।
আফ্রা ফ্রেশ হতে চলে যায়।
এদিকে
কাব্য ছাদে দাঁড়িয়ে আছে একা! ড্রিংকের গ্লাস টা হাতে নিয়ে আছে সে। হঠাৎ
-- আফ্রাকেই তাহলে চাকরি টা দিলি!(সামির)
-- হুম! ওকে এই ৩ মাস এতো টা টরচার করবো যে আমি যতটা কস্ট পেয়েছি তার থেকে দ্বিগুণ কস্ট ও পায়!
-- কিন্তু তুই এতে খুশি হবি?
-- কেন হবো না! অবশ্যই খুশি আমি!
-- আমার তো মনে হচ্ছে না!
-- আমি খুশি!
বলেই কাব্য গ্লাসে চুমুক দেয়।
পরেরদিন সকালে আফ্রা অফিসে এসে কেবিন ঢুকে দেখে কাব্য এখনো আসেনি! তাই সে ফাইল গুছিয়ে রাখতে থাকে। তখনই লক্ষ করে কেবিনের কোণায় একটা গাছ! আফ্রা গিয়ে সেটায় পানি দেয়। মনে হচ্ছে রোজ এটার যত্ন নেয়া হয়। আফ্রা এই কাজ শেষ করে পুরো কেবিন টা গোছায়! সব কেমন একটা লাগছে তার।
কাজ শেষ করে চেয়ারে একটু বসে,কাজের জন্য আজ জলদি ঘুম থেকে উঠে তাই কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছে তাই সে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে। কখন সে ঘুমিয়ে পড়ে বুঝতেই পারেনি
হঠাৎ পানির ঝাপটায় সে লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে! দেখলো সামনে কাব্য দাঁড়িয়ে আছে।
-- কাজ করতে এসেছো নাকি ঘুমাতে(কাব্য)
আফ্রা দ্রুত উঠে দাঁড়ায়
-- সরি স্যার আসলে আমি পুরো রুম গুছিয়ে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছলাম!
-- বাহানা দেবে না! যাও কফি নিয়ে আসো!
আফ্রা মাথা নেড়ে বেরিয়ে যায়।
কিছুক্ষন পর এক কাপ কফি নিয়ে কেবিনে আসে, কফি এনে কেবিনের এক কোনায় দাঁড়িয়ে কফি খেতে থাকে নিচের দিকে তাকিয়ে আর অন্য দিকে কাব্য হাত বাড়িয়ে আছে কফির জন্য! তার এই কাজ থেকে কাব্য কি বলবে বুঝতে পারছে না!
আফ্রা কাব্যের দিকে তাকিয়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। সে বুঝতে পারে কফি টা তার জন্য ছিলোনা! জ্বিবে কামড় দিয়ে তাকায় সে
-- সরি স্যার আমি বুঝিনি,আপনি চাইলে নিতে পারেন আমি পুরো খাইনি... (আফ্রা)
--idiot! যাও আরেকটা কফি নিয়ে আসো!
আফ্রা দ্রুত বেরিয়ে যায়।
কাব্য তাকিয়ে থাকে, একে কি টরচার করতে এনেছে নাকি টরচার হতে! এমন ভাবে চলতে থাকলে কি হবে সামনে?