ধরা যাক, আপনার নামে মিথ্যা মামলা হলো—এখন কী করবেন?
ভাবুন: আপনাকে হঠাৎ থানায় ডাকল, বা শুনলেন আপনার নামে মামলা হয়েছে। আপনার প্রথম কাজ কি?
অনেকেই ভয় পেয়ে যায়, পালিয়ে বেড়ায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখে, আবার কেউ ভুল করে পুলিশকে সব বলে দেয়। এগুলো করবেন না।
আমি এখন ধাপে ধাপে বলি:
---
১ম ধাপ: ঠান্ডা মাথায় থাকুন
মিথ্যা মামলার মূল উদ্দেশ্যই আপনাকে ভয় দেখানো, চাপে ফেলা।
ভয় পেয়ে লুকিয়ে গেলে উল্টো “অপরাধী” মনে হবে।
মনে রাখুন: মামলা মানেই দোষী নন। মামলা হলো অভিযোগ—প্রমাণ না থাকলে কিছুই হবে না।
---
২য় ধাপ: কাগজপত্র বুঝুন
মামলার কপি (FIR বা চার্জশিট) সংগ্রহ করুন।
তাতে কী অভিযোগ করা হয়েছে, তারিখ-সময়, সাক্ষীর নাম—সব পড়ে নিন।
ভুল/মিথ্যা তথ্য খুঁজে বের করুন। (যেমন: যে সময়ে অভিযোগ করা হয়েছে, তখন আপনি অন্য কোথাও ছিলেন কিনা)।
---
৩য় ধাপ: আইনজীবী ধরুন
নিজে একা পুলিশের সামনে কিছু বলবেন না।
একজন অভিজ্ঞ ক্রিমিনাল লয়ার নিন।
তিনি কী করবেন?
জামিন করিয়ে নেবেন (গ্রেপ্তার এড়াতে)
পুলিশের জেরা বা আদালতের শুনানিতে আপনাকে রক্ষা করবেন।
---
৪র্থ ধাপ: জামিন নিন (যদি গ্রেপ্তারের ভয় থাকে)
আইনজীবী অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বা হাইকোর্টে অ্যাডভান্স জামিন করাতে পারেন।
জামিন পেলে পুলিশ আর সহজে আপনাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না।
---
৫ম ধাপ: নিজের পক্ষে প্রমাণ জোগাড় করুন
মিথ্যা মামলা খারিজ করার সবচেয়ে বড় উপায় হলো প্রমাণ।
আপনি অন্য জায়গায় ছিলেন (অফিস, হাসপাতাল ইত্যাদি)—এvidence নিন।
অডিও/ভিডিও রেকর্ড, মেসেজ, ফোন কল—সব সংরক্ষণ করুন।
এমন সাক্ষী খুঁজুন যারা বলতে পারবে যে অভিযোগ মিথ্যা।
---
৬ষ্ঠ ধাপ: আদালতে প্রতিরক্ষা
আইনজীবী আপনার হয়ে আদালতে বলবেন, অভিযোগ মিথ্যা।
প্রমাণ দেখাবেন।
এতে মামলা খারিজ হতে পারে বা আপনার অব্যাহতি (ডিসচার্জ) মিলতে পারে।
---
৭ম ধাপ: পাল্টা ব্যবস্থা নিন (যদি প্রমাণিত হয় মামলা মিথ্যা)
আইন বলে, যে মিথ্যা মামলা করে, তাকেও শাস্তি দেওয়া যায়।
দণ্ডবিধি ২১১ ধারা: ইচ্ছাকৃত মিথ্যা মামলা করলে ৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
আপনি ক্ষতিপূরণের মামলা (সিভিল কোর্টে) করতে পারেন।
---
গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
পালিয়ে থাকবেন না। জামিন নিন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লিখবেন না। এটা আপনার বিরুদ্ধে যেতে পারে।
পরিবারকে বুঝিয়ে রাখুন। পুলিশ এলে কীভাবে আচরণ করতে হবে জানিয়ে দিন।
---
একটি ছোট্ট উদাহরণ:
ধরা যাক, আপনার বিরুদ্ধে চুরি মামলার অভিযোগ হলো। কিন্তু যেদিন চুরির কথা বলা হয়েছে, সেদিন আপনি অফিসে ছিলেন এবং সিসিটিভি ফুটেজে সেটা আছে।
আইনজীবী সেই সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে দেখাবে।
প্রমাণ হবে, অভিযোগ মিথ্যা।
মামলা খারিজ হয়ে যাবে।
---
সংক্ষেপে:
মিথ্যা মামলায় ভয় না পেয়ে আইনজীবীর সাহায্য নিন, জামিন নিন, প্রমাণ জোগাড় করুন, এবং প্রয়োজনে পাল্টা মামলা করুন।
--Jahangir Hossain LLB
#JahangirHossainLLB #BangladeshiLawyer #OnlineLawHelp #LegalAwareness #LawEducation #jahangirhossainllb
