গল্পের নাম: "অবহেলার প্রতিচ্ছবি"
(নারীর মন এক সূক্ষ্ম কাঁচ, ভালোবাসা পেলে ঝকমক করে উঠে, আর অবহেলা পেলে চিরে যায় নিঃশব্দে...)
নাম তার তানহা, ছোটবেলা থেকেই হাসিখুশি, প্রাণচঞ্চল এক মেয়ে। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। স্বপ্ন ছিলো শিক্ষকতা করবে, সংসার করবে ভালোবাসায় ভরপুর একটা মানুষকে নিয়ে।
বিয়ের পর তানহার জীবন যেন বদলে গেল। স্বামী রিফাত – ভালোবাসা দিয়েই শুরু করেছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে রিফাত বদলাতে শুরু করে।
প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত রিফাত শুধু নিজের আরাম নিয়ে ভাবে, তানহার চোখের ক্লান্তি দেখে না।
তানহা চুপচাপ সবার খেয়াল রাখে। রান্না করে, পরিষ্কার রাখে, শ্বশুর-শাশুড়ির যত্ন নেয়।
কিন্তু রিফাতের কাছে সে যেন শুধুই এক ‘ঘরের মানুষ’।
"তুমি তো কিছু করো না, সারাদিন তো বাসায় থাকো!" — এই বাক্যটাই যেন তার প্রাপ্য হয়ে গেছে।
তানহার ভেতরে একেকটা দিন যেন কাঁটা হয়ে গেঁথে যেতে থাকে।
সে নিজেকে প্রশ্ন করে,
"আমি কি বদলে গেছি?"
না, সে বদলায়নি।
পরিস্থিতি তাকে বদলে দিয়েছে।
স্বামীর অবহেলা, ভালোবাসার অভাব, গুরুত্বহীন করে রাখার এই আচরণই তার ভেতরের হাসিটাকে নিভিয়ে দিয়েছে।
একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজেকে দেখে —
এক সময়ের প্রাণবন্ত তানহার জায়গায় এক নিঃশব্দ নারী দাঁড়িয়ে।
সে সিদ্ধান্ত নেয়...
এভাবে আর না।
সে আবার পড়াশোনা শুরু করে।
প্রাইভেট টিউশন নেয়।
নিজের ছোট্ট একটা অনলাইন বিজনেস খোলে।
ধীরে ধীরে অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে গড়ে তোলে।
রিফাত প্রথমে অবজ্ঞা করে, পরে অবাক হয়।
একদিন সে জিজ্ঞেস করে,
— "তুমি এত বদলে গেলে কেন?"
তানহা হেসে বলে,
— "নারী কখনো নিজে থেকে বদলায় না... নারী বদলায় পরিস্থিতির চাপে আর স্বামীর অবহেলায়।"
শেষ কথা:
প্রতিটা নারীর ভেতরে একটা যুদ্ধ চলে।
ভালোবাসা পেলে সে ফুল হয়ে ফুটে,
আর অবহেলা পেলে, সে আগুন হয়—জ্বলে উঠে নিজের আলোয়।