বাসর রাতে আয়েশার হাত ধরতেই বরাবরেই অবাক হয়েছি। আয়েশার হাত স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় অধিক ঠান্ডা। তাও কিছু না বলে চুপচাপ ছিলাম। কিন্তু রাতে হঠাৎ যখন আয়েশাকে জড়িয়ে ধরলাম আমি রীতিমত আরো বেশি অবাক হলাম, আয়েশার শুধু হাত না বরং পুরো শরীর ঠান্ডা। মনে মনে এসব অদ্ভুত চিন্তা আসতে লাগলো।
আয়েশাঃ কি হল? সেই কবে থেকে দেখছি আপনি কি চিন্তা করছেন?
আমিঃ না আসলে চিন্তা করছিলাম যে আপনার,,,,
আয়েশাঃ আমার কি?
আমিঃ না থাক কিছু না ঘুমিয়ে পড়ুন।
আয়েশার সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের আগে শুধু আমার সাথে আয়েশার দুবার দেখা হয়েছিল। আর এই দু বারই আয়েশার সাথে আমার শুধু কথা হয়েছে। কখনও তাকে ধরার কথা কল্পনাও করিনি। যাক শরীরের তাপমাত্রা কম এ জাতীয় কিছু চিন্তা করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
কিন্তু সকালে উঠে আয়েশার অদ্ভুত সব আচরণ লক্ষ লক্ষ করলাম। আমি প্রায় সব সময় সকালে উঠে যায়। অর্থাৎ পাঁচটা ছয়টার দিকে। কিন্তু আজ আজব হলেও সত্য দশটার আগে ও আমার ঘুম ভাঙেনি। যদিও রাতে অন্যদিনের তুলনায় 2-1 ঘণ্টা দেরিতে ঘুমিয়েছিলাম। কিন্তু এত দেরিতে তো আমি ঘুম থেকে উঠি না।
ঘুম থেকে উঠতেই আরো বড়োসড়ো একটি ধাক্কা খেলাম। টেবিলে হরেক রকমের খাবার সাজানো। যদি গুনে দেখি তাহলে 30 আইটেম এর বেশি হবে। কিন্তু এত গুলো খাবার কে খাবে? ঘরে শুধু আমি আর আয়েশা থাকি। আমার মা-বাবা থাকে গ্রামে। বিয়ের পরে তারা বলেছে বৌমাকে নিয়ে শহরে যেতে। তারা কিছুদিন পরে আসবে। এতগুলো খাবার দেখে মনে মনে কল্পনার রাজ্যে ডুব দিলাম। একটা মেয়ের পক্ষে এতগুলো খাবার বানানো সম্ভব?আয়েশার প্রত্যেকটা কাজ আমাকে রীতিমত অবাক করছে।
আয়েশাঃ কি হলো এভাবে কি দেখছেন?
আমিঃ না মানে এত গুলো খাবার কে খাবে?
আয়েশাঃ কেন আপনি খাবেন আর কোন কথা হবে না তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসুন। আমি খাবার রেডি করছি।
মনে মনে চিন্তা করতে লাগলাম এই মেয়ের কাজ সব অস্বাভাবিক কেন? শুধু সকালেই নয় দুপুরে, সন্ধ্যা ও রাতে প্রায় হরেক রকম খাবারের ব্যবস্থা করেছে। সারাদিন শুধু কাজ করলো একটু বিশ্রাম ও নিতে দেখলাম না। হিসাব করে দেখলাম প্রায় 16 ঘণ্টার অধিক কাজ করেছে। বিষয়টা আমাকে আরো বেশি অবাক করলো। কিন্তু আরেকটি বিষয় জানলে আপনারা ও অবাক হবেন। মেয়েটি সারাদিন কাজ করেছে অথচ কিছুই খাইনি। আমি অনেক জোর করেছি খাওয়ার জন্য। যতবারই বলেছি কিছু খেয়ে নাও সে বলেছে তার খিদে নেই। তার নাকি কখনো খিদে লাগেনা। এখন শুধু মেয়েটির কথা শুনে অবাক হচ্ছি না বরং ধীরে ধীরে ভয়ও লাগছে।
মনে মনে একটা চিন্তা আসছে মেয়েটা কি মানুষ নাকি জ্বীন।আর এসব চিন্তা করতে পারছিনা। ভয়ের মাত্রাটা অধিক হারে বাড়তে লাগলো।
ছাদে গিয়ে জ্বীন নিয়ে কয়েকটি আর্টিকেল পড়তে লাগলাম। জ্বীনদের স্বভাব কেমন হয়? প্রায় প্রত্যেকটা আর্টিকেলই আমাকে অবাক করছে। কারন কোন না কোন আর্টিকেল এর সাথে আয়েশার মিল রয়েছে।
একটা আর্টিকেলে বলা হয়েছে জ্বীনরা দেখতে স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় অনেক সুন্দর হয়। এই পয়েন্টটা আয়েশার সাথে মিলে গেল। মেয়েটি দেখতে অসম্ভব সুন্দর।
আর্টিকেলে বলা হয়েছে জ্বীনরা কোন বিশ্রাম ছাড়াই সারাদিন কাজ করতে পারে, কিন্তু অবাক হলেও সত্য এই পয়েন্টটিও আয়েশার সাথে মিলে গেছে।
আবার আরেকটি আর্টিকেলে বলা হয়েছে জ্বীনদের কখনো ক্ষুধা লাগে না। এভাবে অনেকগুলা আর্টিকেল পড়েছিলাম।
কিন্তু একটা আর্টিকেল সত্যিই আমার আকর্ষণ কেড়ে নিল।জ্বীনদের কে যখন যেটা বলা হয় তারা সেটা করার জন্য প্রস্তুত থাকে। এই আর্টিকেলটি পরে আমার মাথায় কিছু বুদ্ধি আসলো। চিন্তা করলাম আয়েশার উপর এপ্লাই করা যাক। আমি নিচে গিয়ে দেখলাম আয়েশা কাজ করছে।
আমিঃ আয়েশা একটু এদিকে আসুন?
আয়েশাঃ বলুন?
আমিঃ সোফায় গিয়ে একটু বসুন।
মনে মনে চিন্তা করছিলাম প্রশ্ন করবে কি জন্য বসব। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সোফায় বসে থাকল। আমার কৌতূহল আরও বেড়ে গেল।
আমিঃ আমার সাথে রুমে আসুন।
আমি আয়েশাকে নিয়ে রুমে ঢুকলাম।
আমিঃআয়েশা আমাকে একটি গান শোনান?
আয়েশা গান গাওয়া শুরু করল। খুব মধুর কন্ঠ।
আমিঃ আয়েশা একটু জানালাটা লাগিয়ে দিন।
আয়েশা জানালা লাগিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকলো।
আমিঃ আচ্ছা একটু খুলে দিন।
আমি আয়েশার ধৈর্য পরীক্ষা করা শুরু করলাম। কারণ একটি আর্টিকেলে বলা হয়েছে জ্বীনদের অনেক ধৈর্য্য রয়েছে।
আমিঃ আয়েশা আবার খুলে দিন, আবার লাগিয়ে দিন, আবার খুলে দিন, আবার লাগিয়ে দিন, আবার খুলে দিন, আবার লাগিয়ে দিন।
এভাবে প্রায় অনেক বার বললাম কিন্তু অবাক করার বিষয় আয়েশা একবারও বিরক্ত না হয়ে আমার হুকুম পালন করল। সময় যত ঘনিয়ে আসছে আয়েশার প্রতি কৌতূহল আমার ততই বেড়ে যাচ্ছে।
আমিঃ আয়েশা আপনি এখনই আমার সামনে আপনার শরীরের সমস্ত কাপড় খুলে রাখুন।
মনে করলাম লজ্জা পাবে আর বলবে আমার লজ্জা লাগে আমি পারবোনা। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সাথে সাথে কাপড় সব খুলতে লাগলো।
আমিঃ আরে না না থাক লাগবে না। আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি একটু পরে ঘুমাবো।
এই বলে বারান্দায় চলে গেলাম। আমার যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না এটা স্বাভাবিক কোনো মেয়ে। মন প্রত্যেকবারই বলছে এই হলো একটি জ্বীন। তারমানে কি আমি কোন জ্বীনের সাথে বিয়ে করেছি। আচ্ছা জ্বীনদের বয়স তো অনেক বেশি হয় আয়েশাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করা উচিত ওর বয়স কত?
আমিঃ আয়েশা আপনার বয়স কত?
আয়েশাঃ এইতো 23,,,,
আমিঃ ও আচ্ছা 23 বছর।
আয়েশাঃ আরে না 2300 বছর।
এটা শোনার পর মাথা ঠিক রাখতে পারলাম না। মনে মনে চিন্তা করলাম এখন ঘুমিয়ে নেই যা চিন্তা করার আগামীকাল করব।
আয়েশাঃ দেখুন টেবিলের উপর দুধের গ্লাস রাখা আছে সেগুলো খেয়ে তারপর শুয়ে পড়ুন। তার আগে না।
যাক সুন্দরী বউ এত সুন্দর করে আবদার করেছে না রেখে পারলাম না। এক ঢোকে পুরো এক গ্লাস দুধ খেয়ে ফেললাম। কিন্তু দুধের স্বাদ একটু ব্যতিক্রম লাগলো। থাক হয়তো আমি বেশি চিন্তা করছি তাই এমন লাগছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম আজকেও লেট।১১ টা বাজছে।আজকে আফিসে গেলে বস নিশ্চিত রাগ করবে। অফিসে যাওয়া জন্য বের হবো ঠিক তখনই আয়েশা আমাকে আবার অবাক করে দিল।
আয়েশাঃ এই নিন টিফিন বক্স আপনার জন্য।
আমিঃ এতগুলো খাবার কি শুধু আমার জন্য নাকি পুরো অফিসের সব স্টাফদের জন্য।
গুনে গুনে দেখলাম গতকালকের থেকে দ্বিগুণ খাবার বানিয়েছে আজকে। মনে মনে চিন্তা করলাম এমনি তো আজকে অফিসে লেটে যাচ্ছি, বস বকা দিবে। তার থেকে ভালো বউ এতগুলো খাবার বানিয়েছে এগুলো যদি নিয়ে গিয়ে বসকে দেখায় তাহলে বস নিশ্চয়ই খুশি হবে।
দুটো সিএনজি ঠিক করে খাবার গুলো নিয়ে অফিসে রওনা দিলাম। এতগুলো খাবার দেখে শুধু বস না বরং আমার সব কলিগরা ও খুশি।
বসঃআমিতো আজকে তোমাকে বকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু এখন দেখছি বিয়ে করে তুমি আরো ভালো হয়ে গেছো। সবার জন্য খাবার এনেছো। ধন্যবাদ।
দুপুরের দিকে লাঞ্চের সময় সবাই আয়েশার বাড়ানো খাবারগুলো খাচ্ছিল। আর তারিফ করছিল।
বসঃকোন হোটেল থেকে এনেছ?
আমিঃ আমার বউ বানিয়েছে।
বস ও রীতিমত অবাক। এতগুলো মানুষের খাবার একজনে বানিয়েছে আর সবগুলোই সুস্বাদু। মনে মনে খুশি হলাম চিন্তা করলাম এভাবেই যদি বউ খাবার বানাতে থাকে তাহলে আমার প্রমোশন নিশ্চিত।
অফিস শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম ঠিক এমন সময় আমার হাসিবের সাথে দেখা। হাসিব আমার বন্ধু। একমাস আগেই হঠাৎ করে তার সাথে একরাতে পরিচয় হয়। কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের মধ্যে খুব ভাল একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু আমার বিয়েতে তাকে দাওয়াত দিলে সে তার ব্যবসায়িক কাজের জন্য আসতে পারেনি।
আমিঃ হাসিব চিনসোস আমাকে? কেমন আছিস?
হাসিবঃ এইতো ভালো আছি। তোর বিবাহিত জীবন কেমন চলে?
আমিঃ এইতো ভাই ভালোই।
(আমি যে কত প্যারার মধ্যে আছি সেটা আর হাসিবকে বললাম না। চিন্তা করলাম আগামীকালকে হাসিবকে ঘরে দাওয়াত দিব। তারপর তার সাথে আয়েশার ব্যাপারে সম্পূর্ণ কথা বলব)
আমিঃ হাসিব এক কাজ কর আগামীকালকে তুই আমার বাসায় আয় একেবারে আমার বউকে দেখবি আর তোর সাথেও কিছু সময় কাটালাম।এমনিও অফিস থেকে আমি ছুটি নিয়েছিলাম।
হাসিবঃ আচ্ছা আমি বিকেলের দিকে আসবো। তারপর সারারাত আড্ডা দিব।
এভাবে দুজনে আরো অনেক কথা বললাম। একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং চলে আসায় সে চলে যায়।
আমিও আগামী কালকের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি। ঘরে ঢুকতেই দেখলাম আয়েশা সবে মাত্র গোসল করে বের হয়েছে। এই যেন আমি নিজের চোখের সামনে এক অসম্ভব সুন্দর পরী দেখতে পাচ্ছি। চুল ভেজা, নাকের ডগায় সামান্য সামান্য পানি, ঠোঁট সম্পূর্ণ লাল। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না চিন্তা করলাম একটু রোমান্স করব যেই গিয়ে আয়েশাকে জড়িয়ে ধরলাম আমি আবার বড় ধরনের শকড খেলাম। আয়েশার শরীর অনেক ঠান্ডা।
আয়েশাঃ দেখুন দুষ্টুমি করবেন না এইমাত্র অফিস থেকে আসলেন ফ্রেশ হয়ে আগে খাওয়া-দাওয়া করুন।
মনে মনে আবার চিন্তা করতে লাগলাম আয়েশা কি জ্বীন নাকি মানুষ। যাক অত চিন্তা করে লাভ নেই আগামীকালকে হাসিব আসবে তার সাথে কথা বলবো।
সকালে ঘুম থেকে উঠতে খেয়াল করলাম আজকে আবারো দেরি করে ফেললাম। বউ আজকেও হরেক রকমের খাবার রান্না করেছিল যার ফলে বসের বকা থেকে আবার বেঁচে গেলাম। চিন্তা করতে লাগলাম এভাবে হরেক রকমের খাবার রান্না করলে আমার বেতন তো খাবারের পিছনেই চলে যাবে।
হঠাৎ করে বোর্ড মিটিংয়ে আটকা পড়লাম। বোর্ড মিটিং থেকে বের হয়ে দেখি, আয়েশার অনেকগুলো কল। তাই আর দেরি না করে সাথে সাথে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কিন্তু বাসার ভিতরে ঢুকতে যা দেখলাম তা দেখে স্বাভাবিক কোন মানুষ ঠিক থাকতে পারবে না।
মেঝেতে হাসিবের লাশ পড়ে আছে। হাসিবের শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে। হাসিবের পা দুটো টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছে। হাত দুটোও টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। এমনকি শরীরও কেটে দুই ভাগ করে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয় হাসিবের যৌনাঙ্গ কেটে তার মুখে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মুখ শরীর থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। আর পাশেই মেঝেতে পরে রইলো আমার,,,,,,
.
.
#চলবে......
.
.
.