---------------------------
সেদিন যদি চার অক্ষরের সেই শব্দটা বলতাম তাহলে আজ এমন সত্যিই হতোনা।
.
তারপরের দিন সকালে আমার শাশুড়ি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে।তাই আমি ও আর মায়ের কাছে ফিরে যাইনি। আর তাছাড়া ওনি কেন জানি আমাকে আর আমার সৎ মায়ের কাছে যেতে দিতে চাইলো না, বললো,
--- 'হোস্টেলে থাকার ব্যাবস্থা করে দিবে। কিন্তু তাও মায়ের কাছে যেতে না।'
এই সুযোগে আমি অন্ততপক্ষে আর কয়দিন ওনার কাছে থাকার অনুমতি পেলাম, তাই এতে আমি সম্মতি দিলাম। সকাল থেকে শাশুড়ীমার শরীরের অবস্থা ধীরে- ধীরে অবনতির দিকে যাচ্ছে , ওনি পাগল হয়ে গেলো মায়ের এরুপ অবস্থা দেখে, অনেক ডাক্তার আনলো, কিন্তু সমস্ত ডাক্তারে কোনো কথা না বলে মাথা নিচু করে চলে যায়।
বুঝে ফেললাম আমরা সকলে যে মায়ের হাতে আর বেশি সময় নেই। অবশেষে বিকেলে ঠিক সাড়ে চারটা মা' না ফেরার দেশে চলে যান। তবে সেই যাওয়াটা ওনি কেন জানি মেনে নিতে পারছিলো না। অবশ্য না মেনে নেওয়ারই কথা, হঠাৎ নিজের প্রিয় মানুষগুলোর চলে যাওয়াটা যে কেউই মেনে নিতে চায় না।
.
মা'কে কবর দিয়ে আসার পর ওনি প্রায় খাওয়া- দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো , কিন্তু আমি অনেক জোর করে বকা দিয়ে খাওয়ালাম। শাশুমা মারা যাওয়ার দুদিনের মাথায় আমার মা আসে।
আমার বাড়িতে, মাকে দেখে আমি যতটা খুশী হয়েছিলাম, ওনি ঠিক ততটা অখুশি হয়েছিলেন। কেন জানি ওনি মায়ের সামনে ও ঠিক পর্যন্ত যায় নি, ব্যাপারটা আমার খুব খারাপ লাগলো, সৎ মা হলে ও তো মা, ওনি এমন করছেন কেন।
রেগে গিয়ে ওনাকে বললাম,
-- 'আপনে আমার মায়ের সাথে দেখা করছেন না কেন?'
ওনি তখন গম্ভীর কন্ঠে বললো,
-- 'আমি কোনো বাজে মহিলার সাথে দেখা করিনা।'
কথাটি শুনে আমি প্রচন্ড রেগে গেলাম, ওনার সাথে এক রকম খারাপ আচরণ করে মায়ের হাতটা ধরে ঘর থেকে বাহির হয়ে গেলাম। চলে আসার সময় আলেয়া অনেকবার নিষেধ করলো,কাকুতিমিনতি করলো, কিন্তু আমি তা উপেক্ষা করে চলে গেলাম মায়ের সাথে। ওনি তখন উপরের ঘর থেকে আমার চলে যাওয়াটার দিকে চেয়ে রইলো, অথচ একবার ও নিষেধ করলো না যে, 'তুমি যেও না।'
তাই অভিমান করে চলে আসলাম। মাঝপথে আসার পর কেমন জানী অচেতন লাগলো, বারবার মনে হলো আমি যেনো কিছু একটা হারিয়ে ফেলছি, লোকটির কথা বারবার মনে পড়তে লাগলো, তাই মায়ের হাতটা ছেড়ে দিয়ে সোজা আবার বাড়িতে চলে আসি।
বাড়িতে এসে রুমে ঢুকতেই দেখি ওনি বিছানার উপরে বসে আছে। আমাকে দেখা মাত্রই দাঁড়িয়ে গেলো, আমি তখন সামনে গিয়ে অনেকটা চেঁচিয়ে -- চেঁচিয়ে বললাম,
--- 'এতো স্বার্থপর কেন আপনে?'
ও তখন হেসে বললো,
--- 'স্বার্থপরের আবার আমি কী করলাম?'
--- 'আবার আপনে আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন আপনে কী করলেন? কই একবার ও তো বলেননি যে, 'তুমি যেওনা।'
--- 'হা,হা, হাসালে।'
--- 'হাসার কী বলছি।'
--- 'না মানে তোমার উপর আমার সেই অধিকার নেই, তাহলে মিছেমিছি কেন অধিকার খাটাতে যাবো?'
রেগে গিয়ে লোকটির গায়ে হাত দিতেই দেখি জ্বরে ওনার শরীর পুড়ে যাচ্ছে।
--- 'একি আপনার শরীর দেখি জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে?'
--- 'ও কিছুনা, ঠিক হয়ে যাবে।'
এই বলে ওনি ঘর থেকে চলে যেতে চাইলে আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
--- 'তা এতো রাতে কোথায় যাচ্ছেন?'
--- 'কোথায় আবার মায়ের রুমে যাচ্ছি ঘুমোতে।'
কথাটা শুনে রাগে আর জেদে পুরো শরীরের পশমগুলো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে গেলো। সামনে গিয়ে পান্জাবীর কলার টেনে ধরে বললাম,
--- 'বেশি ভাব দেখান, আপনার এতো ভাব কিসের?এতো দিন মায়ের ঘরে ঘুমেননি কেন?'
এই বলে ওনার হাতটা টেনে নিয়ে বিছানায় ওনাকে শোয়ালাম, তারপর মাথার উপর সারারাত জল পট্টি দিলাম, ওনি কেন জানি আমার পানে চেয়ে বারবার কাঁদছিলো, বালিশ প্রায় ভিজে গেলো, আমি তখন জিজ্ঞাসা করলাম,
--- 'মেয়েদের মতো এতো কান্নার কী হলো।'
ওনি তখন বললো,
--- 'না আসলে এমনেই চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে।'
--- 'মিথ্যে কথা বলার আর জায়গায় পান না।যাইহোক আপনি ঘুমোন।'
ও তখন বললো,
--- 'তুমি বরং আজ আমার পাশে ঘুমাও, কাল হয়তো আমি আর না ও থাকতে পারি।'
কথাটি শুনতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম,
--- 'কী বলছেন এসব?'
--- 'না কিছুনা, এমনেই বলেছি। যাইহোক তুমি আমার পাশে আজ শুয়ে থাকো।'
ওনার কথা ফেলতে পারলাম না, ওনার পাশে শুয়ে ওনার দিকে চেয়ে রইলাম, লোকটির চোখ দুটো লাল, আমি তখন জিজ্ঞাসা করলাম,
-- 'কী হয়েছে?'
ওনি তখন বললো,
-- 'না এমনেই মায়ের কথা মনে পড়ছে তাই।'
.
সেদিন ওর মিথ্যে কথাগুলো আমি বুঝতে পারিনাই , বুঝতে পেরেছি পরেরদিন।যখন ভোরের আলোয় ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি ওনি ঘরে নেই, পাগল- পাগল হয়ে পুরো ঘরে খুঁজলাম, কিন্তু কোথাও পেলাম না, বাইরে গিয়ে আলেয়া কে জিজ্ঞাসা করলাম কিন্তু ও বলতে পারলো না। অবশেষে হতাশা নিয়ে ঘরে আসতেই দেখি টেবিলের উপর আমার সেই ডায়রী আর একটা চিঠি।
তাড়াতাড়ি করে টেবিলের সামনে গিয়ে চিঠিটা হাতে নিলাম , থরথর কন্ঠে পড়তে লাগলাম।
❝❝❝
'আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে মেনে নিয়েছো , হয়তো আমার জন্য তোমার হৃদয়ে সামান্য টুকুু মায়া জন্মেছে কিন্তু না, আমার জন্য তোমার মনে ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই নেই তাইতো তুমি আমার থেকে মুক্তি নিতে চাও।
ভেবেছিলাম একদিন তুমি আমায় ঠিকেই বুঝবে, আমার জন্য তোমার মনের মাঝে একটু জায়গা হবে,কিন্তু না তোমার মনে আমার জন্য কখনো জায়গা হয়নি।
ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারতাম না, যদি না তুমি তোমার মায়ের সাথে চলে যাওয়ার পর ঘরে এসে তোমার ডায়রীটা না পেতাম। জানো এই ডায়রীটার প্রতিটি পেজে অনেক কৌতুহল নিয়ে খুলেছিলাম, বারবার মনে হচ্ছছিলো এই বুঝি দেখবো তুমি আমার জন্য চার অক্ষরের সেই ভালোবাসা শব্দটি লিখে রেখোছ , কিন্তু না বরং প্রতিটা পেজেই তুমি লিখেছো, – ‘আমাকে তুমি ঘৃণা করো, বড্ড বেশি ঘৃণা করো, তোমাকে মুক্তি দিতে, তুমি আমার কাছে মুক্তি চাও।’
যাও দিয়ে দিলাম, আসলে সবার কপালে তো আর ভালোবাসা জুটেনা আমি না হয় তাদের দলে হলাম, তাতে ক্ষতি কী? তুমি জানতে চেয়েছো না আমি তোমাকে কেন বিয়ে করলাম? কেন তোমার মাকে ৫০ হাজার টাকা দিলাম? আসলে তোমার মা তোমাকে আমাদের গ্রামের হাকিম চাচা, যিনি বিভিন্ন জায়গায় নারী পাচার করতো তার কাছে মাএ ২০ হাজার টাকার বিনিময় বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলো।
ব্যাপারটা আমি জানতে পেরে কোনো উপায় না পেয়ে তোমার মাকে নগদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে শুধু তোমাকে বাঁচানোর জন্য আমি বিয়ে করেছি। যদি এটা ভুল হয়ে থাকে তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।
আর হ্যা তুমি চিন্তা করোনা, তোমার ব্যবস্থা না করে আমি যায়নি, ড্রয়ারে দেখ একটা দলিল আছে, ওটা যত্ন করে রেখো আর পারলে আমায় একটু মনে রেখো, ভালো থেকো, আমাকে খোঁজার চেষ্টা করোনা।
বেলাশেষে পাখি যেমন ঠিক তার নীড়ে ফিরে আসে, আমি ও একদিন বেলাশেষে ঠিক তোমার সনে চলে আসবো। পারলে সেদিনটার অপেক্ষা করো।খোদা হাফেজ।
❝❝❝
চিঠিটা পড়ার পর, কান্না করতে করতে, টেবিলের ড্রয়ার টা খুলতেই দেখি সেখানে একটা দলিল, যাতে তিনি তার সমস্ত সম্পত্তি আমার নামে লিখে দিয়ে যান।
পায়ের তলা থেকে মাটি যেনো সরে গেলো, জোরে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে লাগলাম, আমার কান্নার আওয়াজ পেয়ে আলেয়া ঘরে আসলো।ঘরে আসতেই ও সব বুঝতে পেরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
--- 'বললাম না আফা যেদিন চলে যাবে, সেদিন বুঝবেন?'
--- 'আলেয়া ওনি এতো অবুঝ কেন, একটু বুঝলো না আমাকে? ডায়রীতে সাদা পেজগুলোতে কলমের লিখাগুলোই দেখলো, অথচ আমার চোখের কথা গুলো বুঝলো না? ভুল বুঝে চলে গেলো, বুঝলোনা আমি ওনাকে....... '
আলেয়া তখন বললো,
--- 'কী আপনে ওনাকে?'
--- 'কিছুনা।'
আলেয়া তখন অট্টহেসে বললো,
--- 'এখন ও বলতে পারলেন না, আপনার এই চাপা স্বভাবের কারনে ভাইজান আপনার চোখের ভাষা বুঝে ও না বুঝার ভান করে চলে গেলো।আফামনি, আপনে যেদিন নিজেকে মুক্ত বাতাসে ছেড়ে দিবেন, সেদিন দেখবেন আপনার আকাশে আবার ভাইজানের দেখা। আর যদি না পারেন সেটা আপনার ব্যর্থতা।'
এই বলে আলেয়া চলে গেলো।
তবে সেদিন আলেয়ার সেই কথাগুলো আঁকড়ে ধরে আজ ৬ টা বছর হলো আমি তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছি বুঝলেন।
এই বলে লিখাটা বন্ধ করতেই ওপাশ থেকে আলেয়া ঘরে ঢুকলো, চেঁচিয়ে - চেঁচিয়ে বলতে লাগলো,
--- 'আফামনি, ও লেখিকা আফা এখন ও কী গল্প লিখবেন? বিকেলের নাস্তা খাবেননা?'
আলেয়ার কথায় তখন হেসে বললাম,
--- 'আলেয়া গল্প তো অনেক লিখলাম, এবার না হয় তোমার কথায় নিজের জীবন কাহিনী লিখলাম।'
আলেয়া তখন বললো,
--- 'যাক এতো বছর পরে আমার কথাটা রাখলেন।দেখতে- দেখতে অনেকটা বছর কেটে গেলো তাই না আফামনি?'
--- 'হুম।'
--- 'যাইহোক নাস্তা টা খেয়ে নিন, আর হ্যা বললেন না তো আপনার জীবনের - গল্পের নাম কী দিলেন?'
--- ‘#বেলাশেষে।’
--- '#বেলাশেষে! এটা আবার কেমন নাম?'
--- 'ও তুমি বুঝবেনা, এ নামের পিছনে আছে, রহস্যময়তা, যা তোমার চিন্তার বাহিরে। যাও তুমি নিজের কাজে যাও।'
অতঃপর আলেয়া চলে গেলো, আর আমি চা হাতে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম বাহিরে দক্ষিনা বাতাস, ছায়া ঘেরা চারপাশ,
প্রতিদিন এখানে দাঁড়িয়ে এভাবে বাহিরের পানে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি, আর হাজার মানুষের পায়ের চিহ্নিত সেই রাস্তার বাকে তাকিয়ে তার পায়ের চিহ্ন খুঁজি, বেলাশেষেও পূর্ব আকাশে একটু আলো খুঁজি, নিজেকে তো আজ মুক্ত করে দিলাম কিন্তু তাও তার দেখা নেই কেন?
এ অপেক্ষার শেষ কোথায় হবে, আজ তো আমি সেই আমি নেই, আজ আমি বদলে গেছি, তবুও কী তুমি #বেলাশেষে আমার সনে আসবে না? এই ভেবে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে রাস্তার পানে ভালো করে তাকাতেই দেখি এক আগন্তুক ব্যক্তি, চোখে গোল চশমা, রূক্ষ চুল, মলিন চেহারা, গায়ে তালি মারা একটা পাঞ্জাবি, কাঁধে তাহার ব্যাগ, মুসাফির বেশে বারবার বাড়ির এদিক - হতে ওদিক তাকাচ্ছে আর চোখের জল মুছছে।
হঠাৎ উপরে চোখ পড়তে চেয়ে রইলো, আর তার সেই চাওয়া, তার দৃষ্টি আমি যেনো শতবছর ধরে চিনি, কেন জানি মনের ভিতরে পুরোনো সে অনুভূতিটা আবার নতুন করে জাগলো।হাত থেকে চায়ের কাপ টাকে রেখে দৌড়ে নিচে নামলাম, নামতেই দেখি লোকটি চলে যাচ্ছে।পিছু ডাক দিলাম,
--- 'এই যে শুনছেন?একটু দাঁড়ান।'
আমার গলার আওয়াজ লোকটির কান অবদি যেতেই ওনি দাঁড়িয়ে গেলেন পিছন ফিরে আমার পানে তাকালো, আকাশে তখন হালকা বৃষ্টি বৃষ্টি ভাব,নীড়মুখী পাখিদের আনাগোনা, পুরো রাস্তায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের পড়ে থাকা, চারপাশ জুড়ে বকুল ফুলের গন্ধ, বিভিন্ন পোকামাকড়ের মৃদু কলরব, সন্ধার আবাস, বেলা প্রায় শেষ তবুও পূব আকাশে আজ লালচে রংয়ের সূর্যের আভাটা যেনো দিব্যি দেখা যাচ্ছে , সেই আলোতে কাঁপা কাঁপা ওষ্ঠদ্বযে লোকটির অতি নিকটে যেতেই থমকে গেলাম।
সেই চিরচেনা অমায়িক হাসিটা দেখে , সেই চিরচেনা মুখ, সেই চিরচেনা মানুষটাকে দেখে , আমি তখন আকাশের পানে তাকিয়ে চোখের জল ফেলে বললাম,
--- 'বুঝতে পারলাম #বেলাশেষে ও আজ কেন আমার আকাশে এতো আলো?'
লোকটির খুব কাছে যেতেই তখন ও বললো,
--- 'কেমন আছো প্রিয়?'
কথাটি কানে আসতেই ওকে জড়িয়ে ধরলাম, শক্ত করে ধরে রাখলাম যেনো আর পালিয়ে যেতে না পারে।বহু বছর পর সে অপেক্ষার সমাপ্তি।অবশেষে সেই চিরচেনা সুর আমাকে ডাকলো।
শান্ত কন্ঠে তাকে বললাম,
--- 'তুমি এসেছো?'
--- 'আসবো না, সেদিন তো বলেছিলাম #বেলাশেষে আবার তোমার কাছে ফিরে আসবো।'
চোখেরজল ফেলে - ফেলে অনুতাপের চোখে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম, নিচে বসে পড়লাম ওর পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার জন্য।
ও তখন আমাকে বললো,
--- 'কী করছো এটা?'
--- 'আমাকে ক্ষমা করে দেও।'
--- 'তুমি তো কোনো অন্যায় করো নি, তাহলে ক্ষমার প্রশ্ন আসছে কেন?'
--- 'যদি অন্যায় নাই করতাম তাহলে সেদিন কেন রাগ করে চলে গেলে? এতো অভিমান, একটু ও আমায় বুঝলে না।'
--- 'তুমি কী আমায় বুঝতে দিয়েছো তোমাকে?
যাইহোক তবে তুমি এ কয় বছরে অনেকটায় বদলে গেছো।'
--- 'তখন বয়স ছিলো ১৭ আর এখন ২৩, অনেকটা বুঝের হয়ে গেছি, আর অনেকটাই শান্ত হয়ে গেছি, এখন আর সেই অভিমান, জেদ কাজ করেনা। মনের মধ্যে কোনো ইগো ও কাজ করেনা, তাইতো ভালোবাসি শব্দটি ও এখন সহসা বলতে পারি।'
ও তখন বললো,
--- 'কী বললে আরেকবার বলবে?'
--- 'ভালোবাসি তোমায়।'
আকাশের ঝিলিক আর ওর হাসি দুটোই যেনো তখন আমাকে বললো, ‘ইসস এই বাক্যটা যদি সেদিন বলতে, তাহলে আজ বেলাশেষে আফসোস হতোনা।’
ও তখন শক্ত করে আমার হাতটা ধরে বললো,
--- 'অবশেষে হৃদয় মাঝে জায়গা দিলে আমায়, ৬ টা বছর পার করেছিলাম, এই ছোট্ট আশায়।'
তারপর হাঁটতে লাগলাম দুজনে চেনা সেই রাস্তার বাকে, চেনা সেই সুরের তালে, চেনা সেই অনুভূতির স্পর্শে।
(সমাপ্ত)...
(অনেক ধন্যবাদ সবাইকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য।গল্পটা কেমন উপভোগ করলেন অবশ্যই সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন।আবারো দেখা হবে নতুন কোন গল্পে।আসসালামু আলাইকুম)